বরিস জনসনকে দুঃখ প্রকাশ করতে বলেলেন নাজনীনের শ্বশুর-শাশুড়ি

প্রকাশিত: ১:৩৮ অপরাহ্ণ, |                          

ইরানে প্রায় ছয় বছর বন্দী থাকার পর বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিটেন এসে পৌঁছান ব্রিটিশ-ইরানীয়ান নাজনীন জাগারি রাটক্লিফ। আরেকজন ব্রিটিশ-ইরানিয়ান আনুশি আশুরিও ৫ বছর বন্দী জীবন কাটিয়ে একই ফ্লাইটে ফিরে এসেছেন ব্রিটেনে।

ব্রিটেনে পৌঁছার পর সোমবার প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে কথা বলেন নাজনীন। টিউলিপ সিদ্দিক এমপির উদ্যোগে পার্লামেন্ট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। পার্লামেন্টে নাজনীন জাগারি রাটক্লিফ, রিচারড রাটক্লিফ ও তাদের মেয়ে গেব্রিয়েলাকে স্বাগত জানান স্পিকার। ইরান থেকে মুক্তি পাওয়ার পেছনে স্বামী রিচারড রাটক্লিফ সহ যারাই ক্যাম্পেইন করেছেন সবাইকে ধন্যবাদ জানান নাজনীন।

ব্রিটেনের কাছে ইরানের পাওনা অর্থ পরিশোধ করার পরই মুক্তি পান নাজনীন। নাজনীন মনে মনে করেন, অনেক আগেই ব্রিটেন এই ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারতো এবং পরিশোধ করা উচিত ছিল।

তবে যাই হয়েছে, হয়েছে। এখন সুস্থ হয়ে ওঠার সময়।

ইরানে আরও যেসকল দ্বৈত নাগরিককে আটক রাখা হয়েছে, তাদেরও মুক্তি দাবি করেন নাজনীন জাগারি রাটক্লিফ। মুরাদ তাহবাজ, যার ব্রিটেন, আমেরিকা এবং ইরান তিন দেশেরই নাগরিকত্ব আছে, তাঁকে গত সপ্তাহে কয়েকদিনের জন্য গৃহবন্দি রেখে মুক্তি দিয়েছিল ইরানের কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাঁকে আবারও আটক করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। মুরাদ তাহবাজ এর বোন অভিযোগ করেছেন, ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতর মুরাদের মুক্তি নিয়ে উদাসীন।

ব্রিটেনের ফরেন অফিস বলছে, মুরাদ তাহবাজের বিষয়টি জটিল। কেননা ইরান মুরাদকে আমেরিকান হিসেবে বিবেচনা করে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ইরানের সাথে আমেরিকার নিউক্লিয়ার কর্মসূচিতে চলমান অচলাবস্থায় গুটি হিসেবে মুরাদকে ব্যবহার করছে ইরান।

সোমবারের সংবাদ সম্মেলনের আগে রবিবার বিবিসিকে এক সাক্ষাতকার দেন নাজনীন জাগারি রাটক্লিফের শ্বশুর-শাশুড়ি। সাক্ষাৎকারে তাঁরা তৎকালীন ফরেন সেক্রেটারি বরিস জনসনের একটি বক্তব্যকে নাজনীনের আটকাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার জন্য দায়ী করেন। বরিস জনসন পার্লামেন্টারি কমিটিকে বলেছিলেন, নাজনীন সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণ দিতে ইরান গিয়েছিলেন। অথচ সেটি ছিল নাজনীনের পারিবারিক সফর। পরে অবশ্য বরিস জনসন তাঁর ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

এদিকে সোমবার পার্লামেন্টে সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোক্তা ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক এমপি। নাজনীনের মুক্তিতে সরকারের এতো বিলম্ব কেন হলো, তিনিও একই প্রশ্ন রাখেন সংবাদ সম্মেলনে। ফরেন এফেয়ারস সিলেক্ট কমিটিতে এ বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা এবং যাচাই করে দেখার আহবান জানিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক।