বঙ্গবন্ধুর আ’লীগ ক্ষমতায়, কিন্তু এমন কেন হচ্ছে: ড. কামাল

প্রকাশিত: ৩:০৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২১ | আপডেট: ৩:০৫:অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২১

বিশিষ্ট আইনজীবী গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশকে দুর্নীতি ও কুশাসন থেকে মুক্ত করার জন্য মানুষ ভাবছে। দেশটাকে এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। তিনি সবার ঐক্যের মাধ্যমে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরামের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ড. কামাল একথা বলেন।

তিনি বলেন, কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের প্রতিনিধি নিয়ে সংসদ হবে। তারা দেশ শাসন করবেন। মানুষ চাচ্ছে, আমরা দেশটাকে বাঁচাব। দেশটাকে তো এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।

দেশের নানান পরিস্থিতিতেও মানুষ উৎপাদন বাড়িয়ে যাচ্ছে উল্লে­খ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, মানুষের উৎপাদনের শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। মানুষের মধ্যকার ঐক্যকে সংহত করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা কুশাসন, স্বৈরশাসনের শিকার হচ্ছি। এ থেকে মুক্ত হতে হবে। জনগণের ক্ষমতা নিয়ে দেশকে বাঁচাতে হবে। আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই সরকারকে বিদায় দিতে হবে। তারা যথেষ্ট পাচার করেছে, চুরি করেছে।

জ্বালাও পোড়াওয়ের আন্দোলন চান না জানিয়ে প্রবীণ এই আইনজীবী বলেন, ঐক্যের আন্দোলন, দেশ গড়ার আন্দোলন করতে হবে। দলীয় আন্দোলন না, জনগণের ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া লিখিত বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, এরশাদের পর আওয়ামী লীগ, বিএনপি সরকার গঠন করেছে এবং রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে দলীয়করণের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।

বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভোট ডাকাতি করে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে নাগরিক সমাজ ও সাংবাদিকদের মতপ্রকাশ করার স্বাধীনতা খর্ব করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্যাতন, মানবাধিকার লঙ্ঘন বাংলাদেশের সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেননি। প্রশ্ন রেখে ড. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায়। কিন্তু এমন কেন হচ্ছে? রাষ্ট্রের ঘাটতিগুলো কোথায়?

গণফোরাম সভাপতি সংবিধানের সময়োপযোগী সংশোধনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নির্বাচিত সংসদ নিজ এলাকার জনগণের কাছে সরাসরি দায়ী থাকবেন। সংবিধানের ৭০ ও ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধন করতে হবে। একই ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। ন্যায়পাল পদে নিয়োগ দিতে হবে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, ন্যায়পাল ও মন্ত্রীরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন না। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে পৃথক কমিশন করতে হবে। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা এবং স্বাধীন বিচারব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আওম শফিকুল্লাহ, কেন্দ্রীয কমিটির সদস্য মোশতাক আহমেদসহ অনেকে।