১৫ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১১ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত: ৪:০৩ অপরাহ্ণ, |                          

পবিত্র ঈদুল আজহার আগে প্রবাসীরা যে আয় পাঠিয়েছেন, তা অব্যাহত থাকলে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড হতে পারে। ঈদের মাসের প্রথম ১৫ দিনে ১২৬ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১০ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। তবে ১৫ জুলাইয়ের পরে কী পরিমাণ আয় এসেছে, তার হিসাব পাওয়া যায়নি।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসে অবস্থানকারী বাংলাদেশিরা অনেকেই দেশে কোরবানি দিয়ে থাকেন। আবার ঈদের আগে পরিবারের সদস্যদের কাছেও অন্য সময়ের চেয়ে বেশি টাকা পাঠান প্রবাসীরা। আর করোনার কারণে যোগাযোগ সীমিত হয়ে পড়ায় এখন প্রবাসীদের পাঠানো পুরো অর্থ বৈধ পথে দেশে আসছে। এ কারণে ঈদের আগে আয় আসা বেড়ে গেছে।

প্রবাসী আয়সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুলাই মাসের প্রথম ১৫ দিনে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৮ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার, অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৩ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।

বৈধ চ্যানলে আয় বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যাংকাররা কয়েকটি কারণের কথা বলছেন। তার মধ্যে রয়েছে সরকারের ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা। পাশাপাশি অনেক ব্যাংক নিজে ১ শতাংশ অতিরিক্ত প্রণোদনা দিচ্ছে। আর ব্যাংকগুলো উপশাখা ও এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামেগঞ্জে পৌঁছে যাওয়ায় স্বজনেরা সহজে বাড়ির পাশ থেকে আয় তুলতে পারছেন। এ কারণে বৈধ পথে আয় আসা বেড়েছে।

জানতে চাইলে ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তাই প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ পেতে স্বজনদের ব্যাংক শাখায় যেতে হয় না। বাড়ির পাশের এজেন্টদের কাছ থেকে এই অর্থ সংগ্রহ করা যায়। এ জন্য ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের মাধ্যেম প্রবাসী আয় আসা বেড়েছে। ব্যাংকের শাখার চেয়ে এখন এজেন্টদের মাধ্যমে বেশি আয় বিতরণ হচ্ছে।

বিদায়ী ২০২০–২১ অর্থবছরে দেশে সব মিলিয়ে প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এই আয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১ হাজার ৮০৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরের তুলনায় দ্বিগুণ। গত এক অর্থবছরে প্রবাসীরা যে অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন, সেই অর্থে দেশে সাতটি পদ্মা সেতু বানানো সম্ভব। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, পদ্মা সেতু তৈরিতে ব্যয় হবে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার দেশে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিপরীতে ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে। এরপর থেকেই বৈধ পথে প্রবাসী আয় আসা বাড়তে শুরু করে। এদিকে করোনার মধ্যে আমেরিকা থেকে আয় আসা হঠাৎ বেড়ে গেছে। আর কমেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। ২০১৮-১৯ সাল পর্যন্ত আয় পাঠানো শীর্ষ দেশের মধ্যে সৌদি আরবের পর ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। ২০১৯-২০ সাল থেকে সৌদি আরবের পরই আয় বেশি আসছে আমেরিকা থেকে।