উদ্বৃত্ত ২৫ লাখ টাকা ফেরত দিলেন ইউএনও

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, |                          

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে রংপুরের বদরগঞ্জে ভূমি ও গৃহহীন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু পরিবারের জন্য বাড়ি নির্মাণে ৫ কোটি ৭৩ লাখ ১৪ হাজার টাকার বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তর থেকে এসব বাড়ি করে দেওয়া হয়। কিন্তু বাড়িগুলো নির্মাণের পর উদ্বৃত্ত থেকে যায় ২৫ লাখ টাকা। সেই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিয়েছেন ইউএনও মেহেদী হাসান।

বদরগঞ্জ ইউএনও কার্যালয় সূত্র জানায়, ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য ২৯৬টি বাড়ি নির্মাণে বরাদ্দ আসে ৫ কোটি ৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা। জমি আছে, ঘর নেই; এমন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ৩০টি পরিবারের জন্য ৩০টি বাড়ি এবং ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ৮ পরিবারের জন্য ৮টি বাড়ি নির্মাণে আরও ৬৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।

ইউএনও কার্যালয় সূত্র আরও জানায়, প্রথমে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে ২৮৬টি বাড়ি নির্মাণের টাকা বরাদ্দ আসে। পরে আরও ১০টি বাড়ি নির্মাণের জন্য প্রতিটিতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ লাখ ৯১ হাজার টাকা। এ ছাড়া ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ৩০টি এবং আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য ৮টি বাড়ি নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে।
এসব বাড়ি নির্মাণ ও নির্মাণকাজ তদারকির জন্য ইউএনওকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। সদস্য ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। নকশা ও প্রাক্কলিত মূল্যে পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই শতক জায়গায় একটি পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার, টিনের ছাউনিসহ বারান্দা, বসবাসের জন্য দুটি পাকা কক্ষ, রান্নাঘর ও আসবাব রাখার কক্ষ নির্মাণ করে দেওয়া হয়।

বাড়িগুলো নির্মাণের পর বরাদ্দ টাকার মধ্যে ২৫ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত থেকে যায়। পরে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেন ইউএনও মেহেদী হাসান।
ইউএনও মেহেদী হাসান ইতিমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। শিগগিরই তিনি দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। সরকারি কোষাগারে অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে মেহেদী হাসান বলেন, ‘ঘরগুলো তৈরিতে তুলনামূলক ভালো ইট ও বালু কিনেছি কম দামে। এখানে মিস্ত্রি খরচও কম লেগেছে। এ কারণে নির্ধারিত নকশা ও প্রাক্কলিত মূল্যে বাড়িগুলো নির্মাণের পরও ২৫ লাখ টাকা অবশিষ্ট থাকে। সেই টাকা গত অর্থবছরে সরকারি কোষাগারে ফেরত দিয়েছি। এটা কোনো বাহাদুরি নয়। দায়িত্ববোধ ও স্বচ্ছতার জায়গা থেকে এটা করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ইউএনও সাহেব সরকারি টাকায় সঠিকভাবে বাড়িগুলো করে দিয়েছেন। আবার টাকা বেচে যাওয়ায় তা সরকারি কোষাগারে জমাও দিয়েছেন। এটি একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।’