মাঠে নামতে তৃণমূলকে নির্দেশ বিএনপির

প্রকাশিত: ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ, |                          

আন্দোলন ইস্যুতে ভিন্ন কৌশলে এগোচ্ছে বিএনপি। বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি দেওয়ার আগে তৃণমূলকে প্রস্তুত করতে চায় দলটি। তাই এবার জাতীয় ও স্থানীয় নানা সমস্যা নিয়ে মাঠে নামতে সব সাংগঠনিক জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ-পানির দাম বাড়ানো, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য খাতে ব্যর্থতা, স্থানীয় রাস্তা-ব্রিজ নির্মাণে অনিয়মসহ জনসম্পৃক্ত নানা ইস্যুতে কর্মসূচি পালন করতে হবে। ইতোমধ্যে অনেক জেলা শাখা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিসহ নানা কর্মসূচি শুরুও করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য যুগান্তরকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কর্মসূচি পালনের কথা বলা হয়েছে। স্থায়ী কমিটি মনে করে করোনা পরিস্থিতিকে এখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে সরকার। দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি করোনার অজুহাতে বছরের পর বছর কর্মসূচি গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। সরকারের নানা অনিয়ম, অত্যাচার, দুর্নীতিসহ সব অন্যায়ের প্রতিবাদে বিএনপির কাছেই কর্মসূচি প্রত্যাশা করে জনগণ। তাদের প্রত্যাশা পূরণে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন পরিকল্পনা করছেন, স্থানীয়ভাবে কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ এরই অংশ।

জানতে চাইলে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স যুগান্তরকে বলেন, স্থানীয়ভাবে যে দাবি-দাওয়া আছে তা বের করার জন্য সংশ্লিষ্ট কমিটিকে বলা হয়েছে। তারা এগুলো নিয়ে কর্মসূচি গ্রহণ করবে। পানি-বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, করোনার টিকা আনা যাচ্ছে না-এসব ইস্যুতে কর্মসূচি থাকবে।

বিএনপি নেতারা বলেন, এবারের কর্মসূচি হবে জনসম্পৃক্তমূলক। বিভিন্ন সমস্যা ও দাবি-দাওয়া নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াবে নেতাকর্মীরা। তাতেও বাধা দিলে স্থানীয় পর্যায়ে আরও ক্ষোভের সৃষ্টি হবে। সরকারের ওপরও চাপ সৃষ্টি করা যাবে।

গত রোববার রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল জেলা এবং খুলনা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে দাবি করা হয় জেলাগুলোতে সরকারের ব্যর্থতায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে।

সংক্রমণ রোধে এবং সংক্রমিত রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে দ্রুত সবাইকে টিকা প্রদান, বিনা মূল্যে অধিক হারে করোনা পরীক্ষা, পৃথক করোনা হাসপাতাল স্থাপন ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার, আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটর, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, বিনা মূল্যে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।

অধিক হারে সংক্রমিত জেলায় প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ এবং অন্য রোগীদের চিকিৎসা স্বাভাবিক রাখতে পৃথক ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর বিএনপির উদ্যোগে ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় তারা ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে স্মারকলিপিও দেন।

ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এমএ হান্নান খান বলেন, মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনের ট্যাক্স বাড়ানোর প্রতিবাদে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। আমরা জনগণের নানা সমস্যা নিয়ে আরও কর্মসূচি দেব।

শিগগিরই জেলা সফর করবে ৮০ টিম : বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ৮০টি টিম গঠন করেছে বিএনপি। তারা শিগগিরই সাংগঠনিক জেলা সফর করবেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে এক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় নেতারা বিভিন্ন জেলায় যাবেন। সেখানে সবাইকে গাছ লাগানোর জন্য উৎসাহিত করবেন। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা হবে, আবার জনগণও দেখবে বিএনপি শুধু ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি করে না, স্থানীয় ও সামাজিক ইস্যুতেও কাজ করে