রামেকের করোনা ইউনিটে আরও ১৭ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, |                          

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনে আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের ৮ জনের করোনা পজেটিভ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টার মধ্যে বিভিন্ন সময় মারা যাওয়াদের মধ্যে ৯ জন রাজশাহীর। বাকিদের মধ্যে চাঁপাইনবাগঞ্জের ৪ জন এবং নাটোর ও নওগাঁর দুই জন করে।

মৃতদের মধ্যে আট জন পুরুষ ও নয় জন নারী। এদের মধ্যে পাঁচ জনের বয়স ৬১ বছরের ওপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছয়জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের দুইজন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে একজন নারী মারা যান।

এ নিয়ে চলতি মাসের গত ২৬ দিনে (১ জুন সকাল ৬টা থেকে ২৬ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ২৯১ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ১৩৬ জন ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০১ জন। এর আগে সবচেয়ে বেশী মারা যান ২৪ জুন ১৮ জন এবং সবচেয়ে কম ১২ জুন চারজন।

পরিচালক বলেন, এ হাসপাতালে কোভিড ইউনিটে মৃত্যুহার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২৯ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৭, মার্চে ৩১, এপ্রিলে ৭৯ ও মে মাসে ১২৪ জনের মৃত্যু হয়। আর গত বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল আগস্ট মাসে, ২৬ জন।

শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫২ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৩১ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৮, নাটোরের ছয়, নওগাঁর তিন ও পাবনার চারজন। সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩৪ জন।

হাসপাতালে বেড়েছে রোগির সংখ্যা। শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৩৫৭ বেডের বিপরীতে মোট চিকিৎসাধীন রোগী আছেন ৪৩১ জন। যা আগের দিন ছিল ৪২৩। অতিরিক্ত রোগিদের মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগিদের মধ্যে রাজশাহীর ২৯৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৬ জন, নাটোরের ৩৩ জন, নওগাঁর ৩৪ জন, পাবনার নয়জন, কুষ্টিয়ার তিনজন, চুয়াডাঙ্গার একজন, দিনাজপুরের একজন ও ঢাকার একজন। আইউসিইউতে ভর্তি আছেন ২০ জন।

বেড়েছে শনাক্ত

রাজশাহীতে আবারও বেড়েছে করোনা শনাক্তের হার। শুক্রবার দুটি ল্যাবে রাজশাহীর ৪২৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৪৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যা আগের দিনের চেয়ে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়ে করোনা শনাক্তের হার এখন ৩৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর আগে বুধবার ছিল ৩৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ, মঙ্গলবার ৩৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং সোমবার ছিল ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।

রামেক পরিচালক শামীম ইয়াজদানী, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পৃথক দুটি ল্যাবে শুক্রবার ৫০১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ এসেছে ১৬২ জনের। রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইয়ের ৭২টি নমুনার মধ্যে পজেটিভ এসেছে ১৪ জনের।

উল্লেখ্য, ঈদের পর থেকে রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকলে গত ১১ জুন সিটি করপোরেশন এলাকায় এক সপ্তাহের ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ ঘোষণা করা হয়। এরপর দুই দফায় বাড়িয়ে তা আগামী ৩০ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত করা হয়েছে।