২১৬ দিন ধরে করোনায় আক্রান্ত এইচআইভি পজিটিভ নারী

প্রকাশিত: ৪:০৭ অপরাহ্ণ, |                          

একই শরীরে বাসা বেঁধেছে এইচআইভি পজিটিভ ও মারণ করোনা ভাইরাস। দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষকরা ৩৬ বছরের এক নারীর দেহে এই দুটি মারাত্মক রোগের সন্ধান পেয়েছেন। ওই নারী ২১৬ দিন ধরে করোনা ভাইরাস বহন করছেন এবং সেই রোগীর শরীরেই নাকি করোনা ভাইরাস ৩২ বারের বেশি বার চরিত্র বদল করেছে বা সেটির মিউটেশন হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ কোনো ব্যক্তির তুলনায় একজন এইচআইভি পজিটিভ রোগীর করোনায় মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ২.৭৫ গুণ বেশি। যদিও এক্ষেত্রে আক্রান্ত নারীটি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। তার শরীরে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা বৃটেনে মেলা স্ট্রেইনগুলি পাওয়া গেছে। মেডিকেল জার্নাল ‘মেডআরএক্সআইভি’-তে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। সেখানেই জানা গেছে ওই নারীর কথা।

২০০৬ সালে তার শরীরে প্রথম বার এইচআইভি ধরা পড়ে। তারপর থেকে ক্রমশই খারাপ হয়েছে তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এরপর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি করোনা আক্রান্ত হন। দেখা গেছে তারপর থেকে তার শরীরে ১৩ বার ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন মিউটেশন ঘটিয়েছে। সেই সঙ্গে আরো ১৯ রকমের জিনগত পরিবর্তন হয়েছে তার। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৩০ বারেরও বেশি বার মিউটেশন ঘটিয়েছে ভাইরাস। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের কেস থেকে কোভিড-১৯ এর মিউটেশনের ক্ষমতা সম্পর্কে আরো নতুন তথ্য জানা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গোটা বিশ্বকে রক্তচক্ষু দেখানো এই মারণ ভাইরাসের এমন কাণ্ড এর আগে চোখে পড়েনি গবেষকদের। সেই কারণেই এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছেন সারা দুনিয়ার গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা। রিপোর্ট অনুযায়ী এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে, এই মিউটেশনগুলি নারীর মাধ্যমে অন্য কারো দেহে সংক্রমিত হয়েছে কিনা। তবে গবেষকরা জানান যে এটি সম্ভবত কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, কারণ বেশিরভাগ নতুন ভ্যারিয়েন্টগুলি দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু নাটালের মতো অঞ্চল থেকে উদ্ভূত হয়েছে যেখানে ৪ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ১ জনেরও বেশি এইচআইভি পজিটিভ। এইচআইভি-সংক্রমিত ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ হওয়ার ঝুঁকি বেশি এ সংক্রান্ত প্রমাণের তথ্য খুব কম পাওয়া গিয়েছে এবং একাধিক মেডিকেল কাকতালীয় ঘটনায় গবেষকরা জানিয়েছেন যে যদি এ ধরনের একাধিক কেস পাওয়া যায় অ্যাডভান্স এইচআইভি আক্রান্ত রোগীরা পুরো বিশ্বের জন্য ভ্যারিয়েন্ট কারখানায় পরিণত হতে পারে।