বালাগঞ্জে ধীরাজ পাল হত্যাকান্ড: হত্যাকারীদের খুঁজছে পুলিশ

প্রকাশিত: ৮:৩৩ পূর্বাহ্ণ, |                          

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় ইটভাটার প্রধান ব্যবস্থাপক ধীরাজ পালকে (৬০) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। তাকে অফিসকক্ষেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আর এ হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে ১৬ মিনিটের মধ্যে।

সোমবার সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ওসমানীনগর সার্কেল) রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২৮ মে বেলা ১টা ৩৫ মিনিট থেকে ১টা ৫১ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি। ঘটনার দিন বিকাল থেকে আমরা তদন্তে নামি। সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পিবিআই সিলেটের এসপি খালেদ-উজ জামান।

এ ঘটনায় ইটভাটার মালিকপক্ষ, সহকারী ম্যানেজার ও লাশের সঙ্গে হাসপাতালে যাওয়া ছয়জনকে পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিবি) সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে তাদের কাছে সন্দেহজনক কোনো তথ্য মেলেনি। ধারণা করছি, জানাশোনা কেউ হত্যার সঙ্গে জড়িত।

এ ঘটনায় ২৯ মে দিনগত রাতে নিহতের বড় ছেলে প্রভাকর পাল বাপ্পা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের আসামি করে বালাগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।

নিহত ধীরাজ পাল সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোগলাবাজার থানার আলমপুর গ্রামের দিজেন্দ্র পালের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশসূত্রে জানা যায়, গহরপুর ব্রিকস ফিল্ডে (জেবিসি) ইটভাটায় আট বছর ধরে কর্মরত ছিলেন ধীরাজ পাল। ২৮ মে বন্ধের দিন থাকায় ইটভাটায় কোনো শ্রমিক কাজে ছিল না।

কার্যালয়ে ধীরাজ একাই ছিলেন। সেদিন বেলা ২টার দিকে ইটভাটার সহকারী ম্যানেজার মিনুর মিয়া পাশের একটি মসজিদে জুমার নামাজ শেষ করে ধীরাজের অফিসকক্ষে ঢুকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।

ওই সময় ইটভাটার ক্যাশবাক্স ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান মিনুর।

এ বিষয়ে মিনুর মিয়া বলেন, ইটভাটা পরিচালনায় থাকা একজনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অটোরিকশায় ধীরাজকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ঘটনাস্থলেই তিনি মারা গেছেন।

ধীরাজের মাথার পেছনে ও পায়ে কোপের চিহ্ন ছিল।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্যাশবাক্স লুট করতেই ম্যানেজারকে কুপিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। তবে ক্যাশবাক্সে টাকার পরিমাণ কত ছিল সে বিষয়ে মালিকপক্ষ কিংবা তদন্তসংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কিছু জানা যায়নি।

তবে তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধীরাজের সঙ্গে কারও পূর্ব শত্রুতা ছিল পরিবারের সদস্যদের কাছে এমন কোনো তথ্য নেই।

বালাগঞ্জ থানার ওসি মো. নাজমুল হাসান বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড। ক্লু উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে। এতে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্টু তদন্ত, জড়িতদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচারের দাবিতে ৩০ মে দুপুরে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছেন আলমপুর এলাকাবাসী। মানববন্ধনপরবর্তী সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে অবরোধ করেন তারা।

প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবরোধকালে র্যা ব ৯-এর অধিনায়ক আবু মুসা মো. শরীফুল ইসলাম ও মোগলাবাজার থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত আসামিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন।

এ ছাড়া পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন মোবাইল ফোনে একই আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ তুলে নেন।