৬ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা

প্রকাশিত: ৭:০১ পূর্বাহ্ণ, মে ২৬, ২০২১ | আপডেট: ৭:০১:পূর্বাহ্ণ, মে ২৬, ২০২১

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সারাদিন বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছিল। মঙ্গলবার থেকে বেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় এলাকার নদ-নদীগুলো। ধীরে ধীরে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে কয়েক ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপকূল সংলগ্ন বিভিন্ন জেলার নানা স্থানে ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাটে পানি উঠছে। বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ছে লক্ষাধিক মানুষ।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবার (২৫ মে) রাতে ভয়ঙ্ককর রূপ ধারণ করবে সামুদ্রিক এ ঝড়টি। ইতোমধ্যে সমুদ্রবন্দরগুলোতে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে ছয় ফুটের বেশি উচ্চতার জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে।

এদিকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে একই আলাকায় অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০৫ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার দুপুর নাগাদ উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছের সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির গতিমুখ বাংলাদেশের দিকে না হলেও এর প্রভাব বলয়ে খুলনা উপকূল থাকছে বলে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার আশ্রয় কেন্দ্র। উত্তর বঙ্গোসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে দুর্ঘটনা এড়াতে নদীপথে যাত্রীবাহী সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ অভ‍্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।