চন্ডিপুলে কলেজ প্রভাষকে হত্যার উদ্দেশ্যে গাড়ি চাপা ড্রাইভার এর মৃত্যু ও শিক্ষিকা আহত

প্রকাশিত: ৭:১৫ পূর্বাহ্ণ, |                          

দক্ষিণ সুরমা প্রতিনিধি: আজ ৭-৩-১৯ ইং সকালেসিলেট-সুলতানপুর সড়কের চন্ডিপুলে গাড়ি চাপায় বালাগঞ্জের দেওয়ান আব্দুর রহিম হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক সহ সাথে থাকা শিক্ষিকা গুরতর আহত এবং সিএনজি ড্রাইভার এর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতরা হলেন কলেজের প্রভাষক রওশন জাহান মিলা, প্রভাষক তাসলিমা বেগম ও স্কুল বিভাগের শিক্ষিকা জেসমিন বেগম । সিলেট শহর থেকে সিএনজি যোগে দেওয়ান বাজার কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হলে চন্ডিপুল নর্থ ইস্ট মেডিকেল এর সামনে পৌঁছলে একটি মিনি ট্রাক তাদের সিএনজি গাড়িকে লক্ষ্য করে চাপা দিলে অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান তারা।

দুর্ঘটনায় আহতদের স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সিএনজি ড্রাইভারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। স্কুল শিক্ষিকা জেসমিন বেগম ও প্রভাষক তাসলিমা বেগম , প্রভাষক রওশন জাহান মিলাকে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। রওশন জাহান মিলার পরিবারের অনুরোধে তাকে নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মিরবক্সটুলা সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এদিকে গাড়ি চাপার ঘটনায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিলে সরেজমিন এ সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে প্রভাষক রওশন জাহান মিলার ভাই মুসলেহ উদ্দিন চৌধুরী মিলাদ দেখা পাই। তিনি বলেন আমার বোনকে কলেজে না যাওয়ার জন্য একটি প্রভাবশালী চক্র ফোন করে হুমকি-ধমকি ও প্রাণনাশের ভয় দেখাচ্ছিল । আজ তা বাস্তবায়ন করতে চাইছিল কিন্তু আল্লার রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন। কেন গাড়ি চাপা দেয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন তারা এবং এই চক্র কারা এমনটি জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার ভগ্নিপতি মোহাম্মদ তাইজুল ইসলাম ফয়েজ এর জায়গা সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের একটি শত্রুপক্ষ রয়েছে। তারা বারবার আমার বোনকে নানানভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করতেছে এবং ফোন করে রীতিমতো মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে । শত্রুপক্ষ কারা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন প্রবাসে অবস্থানরত আমার ভগ্নিপতির অনুমতি পেলে আমরা আইনের দ্বারস্থ হব এবং ভগ্নিপতির অনুমতি পেলে শত্রুপক্ষের নাম প্রকাশ করব। এই মুহূর্তে বলা যাবেনা। এর চেয়ে বড় কিছু হলে এর দায়ভার কে নেবে? এমন প্রশ্ন রাখেন মিলাদ। মিলাদের পাশে বসে থাকা মোঃ তাইজুল ইসলামের দীর্ঘদিনের বন্ধু মদন মোহন কলেজ এর প্রভাষক মোঃ সাইফুর রহমান বলেন আমার বন্ধু মোহাম্মদ তাইজুল ইসলাম সিলেট শহরের সকলের পরিচিত এবং একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। শত্রুপক্ষের হামলা-মামলার শিকার হয়ে তিনি আজ দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। আজ আমাদের একজন সহকর্মীকে গাড়ি চাপা দিয়েছে,তা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা সবই জানি এবং তাদেরকে চিনি। তারা যদি মনে করে ক্ষমতা এবং প্রশাসন সব তাদের। তাহলে আমরা শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদ করব। প্রয়োজন হলে সাংবাদিক ডেকে প্রেস কনফারেন্স করব। তবে এই মুহূর্তে তাদের নাম না বলাটাই ভালো। এ বিষয়ে লেখক ও সাংবাদিক তাইজুল ইসলাম এর সাথে ফোন করে কথা বলতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোনে কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে বালাগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত দেওয়ান আব্দুর রহিম হাই স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ খলিলুর রহমানের সাথে ফোনালাপে কথা বললে তিনি বলেন গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল এ বিষয়ে আমরা আরো খোঁজ খবর নিচ্ছি । তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মানুষের সাথে কথা বলে বুঝতে পেরেছি এটি গাড়ি চাপার ঘটনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রভাষক বলেন রওশন জাহান মিলাকে হত্যা করার লক্ষ্যে গাড়ি চাপা দেয়া হয়েছে। আমরা যতটুকু জানি তার স্বামী দেশ ছেড়ে বিদেশে অবস্থান করতেছেন এবং ঘটনাটি পরিকল্পিত। এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি খাইরুল ফজল এর কাছে ফোনালাপে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি এবং মিনি ট্রাক আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, প্রাথমিক তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে । কলেজ কর্তৃপক্ষ অথবা শিক্ষিকাবৃন্দের পক্ষ থেকে অথবা পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়নি।