১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দিতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

প্রকাশিত: ১২:৩৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২৫

১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দিতে হবে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকাকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেছেন, ‘সরকার ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের ব্যবস্থা করা। যেখানে সরকার থেকে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ছিল কিন্তু তাও নেওয়া হয়নি।’

হাসনাত বলেন, আমরা এই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে গিয়েছি। কিন্তু সরকার যেহেতু নিজেই দায়িত্ব নিয়েছে, তাই সকল রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করবে। তাই আমরা ৩১ ডিসেম্বর ঘোষণাপত্রটি ঘোষণা করিনি।

বুধবার (০৮ জানুয়ারি) কুমিল্লা নগরীতে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সমর্থনে জনসংযোগ শেষে শহরের টাউন হল মাঠে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

এর আগে পুলিশ লাইন থেকে শুরু করে কান্দিরপারসহ নগরীর বিভিন্ন সড়কে জনসংযোগ করেন হাসনাত।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, আমরা রাজনৈতিক ঐকমত্যকে প্রাধান্য দিয়েছি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো ৩১ ডিসেম্বরের পর এতদিন কেটে গেলেও সরকার এখনো কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি।

হাসনাত বলে, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, যারা এই ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছিল, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল ও সকল শ্রেণির পেশার মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ঘোষণা করতে হবে।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ঘোষণাপত্রে অবশ্যই শহীদ ও আহতদের স্বীকৃতি দিতে হবে। ৪৭, ৭১ ও ২৪ এর যে ধারাবাহিকতা সেখানে সুস্পষ্ট তার বর্ণনা থাকতে হবে। আর সেটাতে আমরা কোন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি পেয়েছি তার বর্ণনা থাকতে হবে। যে রাজনৈতিক দলগুলো অংশগ্রহণ করেছে তাদের অংশগ্রহণের স্বীকৃতি সেখানে থাকতে হবে। জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ফ্যাসিবাদী রাজনীতির বিরুদ্ধে সে আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এই ঘোষণাপত্র থাকতে হবে। আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি অঞ্চলে ঘুরে বেড়াব এবং সাধারণ মানুষ যারা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল তারা এই ঘোষণাপত্রের কি চায় আমরা তুলে ধরব। যাতে ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে আর কোনো ফ্যাসিবাদ মাথা চাড়া না দিতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে আহত ও শহীদদের পরিবারকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা ছিল। কিন্তু আমরা এখনো আহতদের ও শহীদ পরিবারের আর্তনাদ শুনি। যেটি অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। আমরা চাই এই সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে আহত ও শহীদদের প্রতি। আমরা দেখেছি, আহত ও শহীদদের পরিবারের জুলাই ফাউন্ডেশন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার শিকার হয়েছিল। আমরা বলতে চাই, ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশের যেন কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না থাকে।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মাঝেমধ্যে দোহাই দিয়ে বলতে শুনি, সিন্ডিকেটের হাত পরিবর্তন হয়েছে, চাঁদাবাজির হাত পরিবর্তন হয়েছে, টেন্ডারবাজির হাত পরিবর্তন হয়েছে। আপনাদের আমরা দোহাই দেওয়ার জন্য এখানে আনি নাই। এক্সকিউজ দেওয়ার জন্য এখানে আনি নাই। আপনাদের এখানে এনেছি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। যেই হাত চাঁদাবাজি করে, টেন্ডারবাজি করে, সেই হাত ভেঙে দিতে হবে। এক্সকিউজ দেওয়ার সুযোগ আপনাদের নেই। আপনাদের যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। ৫ আগস্টের পূর্বে আমাদের যে অবস্থান ছিল, আমাদের সে অবস্থান অব্যাহত থাকবে।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ